আপনি যদি একজন কৃষক হন বা কৃষিকাজের সাথে কোনোভাবে জড়িত থাকেন, তবে এই দৃশ্য টি আপনার কাছে খুব পরিচিত। অনেক কষ্ট করে ফসল ফলালেন, কিন্তু বাজার এ গিয়ে দেখছেন দাম নেই। সারের দোকানে গিয়ে দেখছেন দাম আকাশছোঁয়া। একটি সেচ পাম্প কেনার সামর্থ্য আপনার একার নেই। এই সব হতাশার গল্প এর মধ্যে আশার আলো হতে পারে আপনার “কৃষি সমবায়”। কিন্তু এই সমবায় জিনিসটা আসলে কী? এটা কীভাবে কাজ করে? আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, কৃষি সমবায়ের ভিত্তি কি? কীসের ওপর ভর করে একটি সমবায় সমিতি এতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে? যা দিয়ে হাজারো কৃষকের ভাগ্য বদলে দিতে পারে?
এই ব্লগ পোস্টে, আমি ঠিক এই বিষয় গুলো নিয়ে-ই কথা বলতে এসেছি। আমি কোনো জটিল তাত্ত্বিক কথা বলব না। বরং সহজ ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা করবো কৃষি সমবায়ের সেই মূল স্তম্ভ বা ভিত্তিগুলো কী কী? যা একটি সমবায়কে সফল এবং টেকসই করে তোলে। চলুন, এবার শুরু করা যাক।
কৃষি সমবায় কি? (সহজ ভাষায় সংজ্ঞা)
এক কথায়, কৃষি সমবায় হলো কৃষকদের নিজেদের দ্বারা গঠিত ও পরিচালিত একটি সংগঠন বা ব্যবসার প্রতিষ্ঠান। ভাবুন, আপনার গ্রামের ৫০ জন কৃষক একসাথে মিলে মিশে একটি দল তৈরি করলেন। একটি সাধারণ কোম্পানি আর সমবায়ের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো এর উদ্দেশ্য। একটি কোম্পানির মূল লক্ষ্য থাকে মালিকের জন্য সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করা। কিন্তু একটি সমবায়ের মূল লক্ষ্য মুনাফা নয়, বরং এর সদস্যদের সেবা দেওয়া।
ধরুন, আপনারা ৫০ জন মিলে ঠিক করলেন, সবাই মিলে একসাথে সার কিনবেন। এতে পাইকারি দাম পাওয়া গেল, খরচ কমে গেল। আবার, সবাই মিলে ঠিক করলেন, নিজেদের সবজি একটি ট্রাক ভাড়া করে সরাসরি শহরের বাজারে পাঠাবেন, কোনো মধ্যস্বত্বভোগী বা ফড়িয়াকে দেবেন না। এতে আপনারা ফসলের ভালো দাম পেলেন। এটাই হলো কৃষি সমবায়। এর মূল মন্ত্র হলো “সকলে মোরা সকলের তরে, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।” এটি এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে কৃষকরা নিজেরা নিজেদের মালিক এবং নিজেরাই নিজেদের গ্রাহক হয়।
কৃষি সমবায়ের মূল ভিত্তি: ৭টি আন্তর্জাতিক নীতি

একটি ঘর যেমন কয়েকটি পিলারের উপর দাড়িয়ে থাকে, তেমনি বিশ্বজুড়ে প্রতিটি সফল সমবায় ৭টি মূল নীতির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। এগুলোকে সমবায়ের আন্তর্জাতিক মূলনীতি বা “রচডেল নীতি” (Rochdale Principles) বলা হয়। এগুলোই একটি কৃষি সমবায়ের আসল ভিত্তি বা প্রাণশক্তি।
১. স্বেচ্ছাকৃত ও উন্মুক্ত সদস্যপদ (Voluntary and Open Membership)
এর মানে হলো, সমবায়ে যোগদানের জন্য কাউকে জোর করা যাবে না। আবার, যারা কৃষি কাজের সাথে জড়িত, তাদের জন্য এর দরজা খোলা থাকবে। এখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র বা রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। আপনি যদি মনে করেন এই সমবায় আপনার উপকারে আসবে, আপনি স্বেচ্ছায় এতে যোগ দেবেন। এটাই এর প্রথম শক্তি, স্বাধীনতা।
২. সদস্যদের গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ (Democratic Member Control)
এটিই আমার মতে, সমবায়ের সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি। একটি সমবায়ে আপনার কত টাকা শেয়ার আছে বা আপনি কতটা প্রভাবশালী, তার ওপর আপনার ভোটের ক্ষমতা নির্ভর করে না। এখানে নীতি হলো “এক সদস্য, এক ভোট”। একজন কৃষক যার ১টি শেয়ার আছে, তারও যে ক্ষমতা; একজন ধনী কৃষক যার ১০০টি শেয়ার আছে, তারও একই ক্ষমতা। সমিতির সব সিদ্ধান্ত সদস্যদের ভোটেই নেওয়া হয়। এই গণতন্ত্রই সমবায়কে বাঁচিয়ে রাখে।
৩. সদস্যদের অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ (Member Economic Participation)
সমবায় তো আর আকাশ থেকে টাকা পায় না। এর সদস্যরা মিলেই এর মূল ধন জোগান দেয়। (যেমন, শেয়ার কেনা বা সঞ্চয় জমা রাখা)। বছর শেষে সমবায় করে যে লাভ বা “উদ্বৃত্ত” (Surplus) হয়, তা সদস্যদের মধ্যেই ভাগ করে দেওয়া হয়। তবে এই ভাগাভাগিটা হয় কে কত টাকা শেয়ার কিনেছে তার ওপর ভিত্তি করে নয়। বরং কে সমবায়ের সাথে কতটা লেনদেন করেছে তার ওপর ভিত্তি করে। যেমন, যে কৃষক সমবায়ের মাধ্যমে বেশি দুধ বিক্রি করেছেন, তিনি লাভের অংশ ও বেশি পাবেন।
৪. স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা (Autonomy and Independence)
সমবায় একটি স্বাধীন ও স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান। এটি এর সদস্যদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়। যদিও সমবায়গুলো অনেক সময় সরকার বা অন্য কোনো সংস্থা থেকে ঋণ বা সহায়তা নিতে পারে, কিন্তু তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা সবসময় থাকতে হবে। বাইরের কেউ এসে সমবায়ের উপর খবরদারি করতে পারব না।
৫. শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং তথ্য (Education, Training, and Information)
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জ্ঞানই শক্তি। একটি সমবায়ের সদস্যরা যদি নাই জানেন যে সমবায় কীভাবে চালাতে হয়, কীভাবে হিসাব রাখতে হয়, বা আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি কী, তবে সেই সমবায় বেশি দিন টিকবে না। তাই একটি সফল সমবায়ের অন্যতম ভিত্তি হলো এর সদস্যদের, পরিচালকদের এবং কর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তথ্য সরবরাহ করা।
৬. সমবায়সমূহের মধ্যে সহযোগিতা (Cooperation among Cooperatives)
“দশে মিলি করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ” এই নীতি শুধু একটি সমবায়ের ভেতরেই নয়। এটি বিভিন্ন সমবায়ের মধ্যেও প্রযোজ্য। একটি গ্রামের ছোট সমবায় যখন জেলা বা জাতীয় পর্যায়ের অন্য সমবায়ের সাথে মিলে কাজ করে, তখন তাদের শক্তি বহু গুণ বেড়ে যায়। তারা একসাথে বড় বাজার ধরতে পারে বা সরকারের কাছে নিজেদের দাবি জোরালো ভাবে তুলে ধরতে পারেন।
৭. সামাজিক দায়বদ্ধতা (Concern for Community)
একটি ভালো সমবায় শুধু তার সদস্যদের নিয়েই ভাবে না, বরং সে যে সমাজে অবস্থিত, সেই পুরো সম্প্রদায়ের বা কমিউনিটির কথাও ভাবে। যেমন, একটি কৃষি সমবায় হয় তো তাদের লাভের অংশ দিয়ে গ্রামের একটি রাস্তা মেরামত করল। একটি স্কুল তৈরিতে সাহায্য করল, বা পরিবেশ রক্ষার জন্য গাছ লাগালো। এই সামাজিক দায়বদ্ধতাই সমবায়কে মানুষের কাছে আরও বেশি আস্থাশীল করে তোলে।
কেন কৃষি সমবায়ের এই ভিত্তিগুলো এত গুরুত্বপূর্ণ?
এই যে ৭টি নীতির কথা বললাম, এগুলো শুধু বলার জন্য বলা নয়। এগুলোর প্রত্যেকটির বাস্তব গুরুত্ব আছে।
- আস্থা তৈরি: যখন সদস্যরা দেখেন যে “এক সদস্য, এক ভোট” নীতি মানা হচ্ছে এবং সব কিছু স্বচ্ছ ভাবে হচ্ছে, তখন তাদের মধ্যে গভীর আস্থা তৈরি হয়।
- টেকসই উন্নয়ন: শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সদস্যরা দক্ষ হয়ে ওঠেন, ফলে সমবায়টি দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকতে পারে।
- অর্থনৈতিক সচ্ছলতা: অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ এবং লাভের সুষম বণ্টন সদস্যদের পকেট পর্যন্ত পৌঁছায়। মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য যখন কমে যায়, তখন কৃষকের মুখে যে হাসি ফোটে, তার চেয়ে বড় সফলতা আর কিছু হতে পারে না।
- সামাজিক পরিবর্তন: উন্মুক্ত সদস্যপদ এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার নীতিগুলো গ্রামীণ সমাজে বিভেদ কমায় এবং এক ধরনের সামাজিক বন্ধন তৈরি করে।
বাংলাদেশে কৃষি সমবায়ের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কৃষি সমবায় কেন প্রয়োজন এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের বেশিরভাগ কৃষকই ক্ষুদ্র বা প্রান্তিক। তাদের একার পক্ষে বাজারের সাথে লড়াই করা প্রায় অসম্ভব। এখানেই সমবায় তার আসল জাদু দেখায়।
আসুন, একটি টেবিলের মাধ্যমে দেখি বাংলাদেশের কৃষকদের প্রধান সমস্যা এবং কৃষি সমবায় কীভাবে তার ভিত্তি ব্যবহার করে সেগুলোর সমাধান দেয়:
| কৃষকের সমস্যা | কৃষি সমবায়ের সমাধান (উদ্দেশ্য) |
| ১. উচ্চ মূল্যে উপকরণ কেনা: সার, বীজ, কীটনাশক একা কিনতে গেলে খুচরা মূল্যে কিনতে হয়, যা অনেক বেশি। | সম্মিলিত ক্রয়: সমবায় যখন সব সদস্যের জন্য একসাথে শত শত বস্তা সার কেনে, তখন পাইকারি মূল্য পায়। এতে প্রতি কেজিতে কৃষকের খরচ বাঁচে। |
| ২. ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া: মধ্যস্বত্বভোগী বা ফড়িয়ারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এবং কম দামে কৃষকের থেকে ফসল কিনে নেয়। | সরাসরি বাজারজাতকরণ: সমবায় সদস্যদের সব ফসল এক জায়গায় সংগ্রহ করে, নিজস্ব পরিবহনে সরাসরি শহরের বাজারে বা বড় কোম্পানির কাছে বিক্রি করে। এতে কৃষক সর্বোচ্চ দাম পান। |
| ৩. প্রযুক্তির অভাব: একটি আধুনিক ট্রাক্টর বা হারভেস্টার (ফসল কাটার যন্ত্র) কেনার সামর্থ্য একজন কৃষকের থাকে না। | যৌথ মালিকানা: সমবায় নিজের টাকায় ট্রাক্টর বা সেচ পাম্প কেনে। সদস্যরা পালাক্রমে বা অল্প ভাড়ায় সেই যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারেন। |
| ৪. ঋণের অভাব: জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া কৃষকদের জন্য বেশ জটিল ও সময়সাপেক্ষ। | সহজ শর্তে ঋণ: সমবায় তার সদস্যদের সঞ্চয় একত্রিত করে একটি তহবিল গঠন করে। সেখান থেকে সদস্যদের খুব সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ দেওয়া হয়। |
একটি সফল কৃষি সমবায়ের ভিত্তি কতটা মজবুত? (বাস্তব উদাহরণ)
আপনি হয়তো ভাবছেন, এগুলো কি শুধু তাত্ত্বিক কথা? একদমই না। বাংলাদেশে এর সফল উদাহরণ আছে। মিল্ক ভিটা (Milk Vita) এর কথা ভাবুন।মিল্ক ভিটা হলো দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতিগুলোর একটি ইউনিয়ন। এর ভিত্তি কী? এর ভিত্তি হলো সেই প্রান্তিক খামারিরা। তারা প্রত্যেকে তাদের গ্রামের প্রাথমিক সমবায় সমিতির সদস্য। তারা নীতি গুলো (গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ) মেনে চলেন। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ লিটার দুধ এই সমবায়ের মাধ্যমে সংগৃহীত, প্রক্রিয়াজাত এবং বাজারজাত হচ্ছে। একজন খামারি যিনি হয়তো দিনে ৫ লিটার দুধ উৎপাদন করেন, তিনি একা সেটা শহরে বিক্রি করতে পারতেন না। কিন্তু সমবায়ের শক্তির কারণে আজ তার দুধ সারা দেশে বিক্রি হচ্ছে এবং তিনি তার ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন।
এই উদাহরণটিই প্রমাণ করে যে কৃষি সমবায়ের ভিত্তি যদি ওই ৭টি নীতির উপর মজবুতভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, তবে তা যেকোনো অসাধ্য সাধন করতে পারে।
আমার শেষ কথা
তাহলে কৃষি সমবায়ের ভিত্তি কি? এর সহজ উত্তর হলো: এর ভিত্তি কোনো একক ব্যক্তি, টাকা বা সরকারি অনুদান নয়।
একটি কৃষি সমবায়ের আসল ভিত্তি হলো এর সদস্যদের পারস্পরিক আস্থা, গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ, সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পারস্পরিক সহযোগিতার দর্শন। এই ভিত্তি যত মজবুত হবে, সমবায় নামক এই ঘরটিও ততটাই শক্তিশালী হবে এবং বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে উঠবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ Section)
প্রশ্ন: কৃষি সমবায় সমিতি গঠন করার নিয়ম কি?
উত্তর: একটি কৃষি সমবায় সমিতি গঠন করতে হলে প্রথমে আপনাকে একই এলাকার সমমনা কিছু কৃষককে (সাধারণত ন্যূনতম ২০ জন) একত্রিত করতে হবে। এরপর সমবায় আইন অনুযায়ী একটি উপ-আইন বা বাই ল তৈরি করে স্থানীয় সমবায় অফিসে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হয়।
প্রশ্ন: সমবায় এবং এনজিও (NGO) এর মধ্যে পার্থক্য কি?
উত্তর: মূল পার্থক্য হলো মালিকানায়। সমবায় তার সদস্যদের দ্বারা মালিকানাধীন এবং সদস্যদের দ্বারাই পরিচালিত হয় (যেমন, মিল্ক ভিটা)। এর লাভ সদস্যদের মাঝেই বণ্টিত হয়। অন্যদিকে, এনজিও সাধারণত অনুদান বা নির্দিষ্ট তহবিল দ্বারা পরিচালিত হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সামাজিক লক্ষ্য (যেমন: শিক্ষা, স্বাস্থ্য) নিয়ে কাজ করে। এর কোনো সদস্য মালিকানা থাকে না।
প্রশ্ন: কৃষি সমবায়ে যোগ দিলে আমার লাভ কি?
উত্তর: আপনার অনেক লাভ। সংক্ষেপে বললে:
১. কম খরচে সার, বীজ ও অন্যান্য উপকরণ কিনতে পারবেন।
২. আপনার উৎপাদিত ফসলের ভালো এবং ন্যায্য দাম পাবেন।
৩. আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি (যেমন ট্রাক্টর) ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
৪. খুব সহজ শর্তে সমবায় থেকে ঋণ নিতে পারবেন।
৫. নতুন কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ ও তথ্য পাবেন।
চুলের জন্য উপকারী ভেষজ উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এখানে প্রবেশ করুন।