কৃষি সমবায়ের উদ্দেশ্য কি বিস্তারিত জানুন

আসসালামু আলাইকুম। আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন, আমাদের দেশের একজন কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলান। কিন্তু দিনশেষে সেই ফসলের ন্যায্য দাম কি তিনি পান? প্রায়শই দেখা যায়, কখনো সারের জন্য বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে, কখনো মহাজনের ঋণের চাপে পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাচ্ছে। আবার কখনো বাজারের দালালদের কারণে আসল লাভ ঘরে তুলতে পারছেন না। এই যে একা একা সংগ্রাম করা, এটাই আমাদের কৃষকদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। কিন্তু ভাবুন তো, যদি ১০ জন, ২০ জন বা ৫০ জন কৃষক একসাথে হাত মেলান, তবে দৃশ্যপটটা কেমন হবে?

এই “একতাই বল” নীতির উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে ‘কৃষি সমবায়’ (Agricultural Cooperative)। এটি কোনো কাল্পনিক ধারণা নয়। এটি গ্রামীণ অর্থনীতি বদলে দেওয়ার একটি পরীক্ষিত হাতিয়ার। এই পোস্টে, আমি আমার অভিজ্ঞতা এবং গবেষণা থেকে আপনাকে খুব সহজ ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা করব যে কৃষি সমবায়ের মূল উদ্দেশ্য কি। এবং এটি কীভাবে বিচ্ছিন্ন কৃষকদের একত্রিত করে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে। চলুন, শুরু করা যাক।

কৃষি সমবায় সমিতি কি? (সংজ্ঞা ও ধারণা)

জটিল সংজ্ঞায় না গিয়ে সহজ করে বলি। কৃষি সমবায় সমিতি হলো এমন একটি সংগঠন, যা কৃষকরা স্বেচ্ছায় একত্রিত হয়ে নিজেদের প্রয়োজনে, নিজেদের দ্বারা এবং নিজেদের কল্যাণের জন্য তৈরি করেন।

সকলে মোরা সকলের তরে
সকলে মোরা সকলের তরে

এর মূলমন্ত্র হলো “সকলে মোরা সকলের তরে”। এটি কোনো লাভজনক কোম্পানি নয়, আবার কোনো দাতব্য সংস্থাও (এনজিও) নয়। এটি এমন একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, যেখানে প্রতিটি সদস্যের একটি করে ভোট থাকে। কারও মূলধন কম বা বেশি, তাতে কিছু যায় আসে না। সদস্যরা একসাথে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনেন। একসাথে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করেন । এবং অর্জিত লাভ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন।

কৃষি সমবায়ের প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ (মূল আলোচনা)

এবার আসুন মূল প্রশ্নে, এই সমবায় সমিতিগুলো ঠিক কী লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে? কেন একজন কৃষকের এতে যোগ দেওয়া উচিত? এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলো আমি ৫টি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করছি।

১. উৎপাদন খরচ কমানো এবং উপকরণ সহজলভ্য করা

কৃষিকাজের প্রথম ধাপেই কৃষকের যে বিপুল খরচ হয়, তা কমানো সমবায়ের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। একটু ভাবুন, আপনি যখন একা এক বস্তা সার বা এক প্যাকেট বীজ কিনতে যান, তখন আপনাকে খুচরা মূল্যেই (Retail Price) কিনতে হয়। দোকানদার আপনার কাছে বেশি দাম চাইলেও আপনার কিছু করার থাকে না। কিন্তু যখন একটি সমবায় তার ১০০ জন সদস্যের জন্য একসাথে ১০০০ বস্তা সার বা ৫০০ প্যাকেট বীজ সরাসরি কোম্পানি বা ডিলারের কাছ থেকে কেনে, তখন কী হয়? তারা পাইকারি মূল্যে (Wholesale Price) বিশাল ছাড় পায়। এই সুবিধাটা সরাসরি প্রত্যেক সদস্য ভোগ করেন।

শুধু তাই নয়। একজন ক্ষুদ্র কৃষকের পক্ষে ৫-৭ লাখ টাকা দিয়ে একটি ট্রাক্টর বা সেচের জন্য গভীর পাম্প কেনা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু সমবায় খুব সহজেই সেই ট্রাক্টর বা পাম্পটি কিনে ফেলতে পারে এবং সকল সদস্য তা পালাক্রমে বা স্বল্প ভাড়ায় ব্যবহার করতে পারে। এতে প্রত্যেকের উৎপাদন খরচ নাটকীয়ভাবে কমে আসে।

২. কৃষকদের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন (ঋণ ও সঞ্চয়)

আমাদের দেশের কৃষকদের একটি বড় অংশ “মহাজনী ঋণ” বা দাদন ব্যবসায়ীদের চক্রে বন্দী। চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ফসল ফলানোর পর, সেই ঋণ শোধ করতে গিয়েই কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে যান। কৃষি সমবায়ের একটি পবিত্র উদ্দেশ্য হলো কৃষকদের এই ঋণের ফাঁদ থেকে মুক্ত করা। সমবায় তার সদস্যদের মধ্যে সঞ্চয়ের মানসিকতা তৈরি করে। সদস্যরা অল্প অল্প করে টাকা জমিয়ে একটি শক্ত তহবিল (Fund) গঠন করেন। যখন কোনো সদস্যের টাকার প্রয়োজন হয় (যেমন: বীজ কেনা বা সন্তানের পড়াশোনার খরচ), তখন তিনি ব্যাংক বা মহাজনের কাছে না গিয়ে, নিজের প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ সমবায় থেকে খুব সহজ শর্তে এবং স্বল্প সুদে ঋণ নিতে পারেন। এটা তার নিজের টাকা, তাই এখানে কোনো হয়রানি বা অসম্মানের ভয় থাকে না।

৩. বাজারজাতকরণে সুবিধা এবং ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা

আমার মতে, এটি কৃষি সমবায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। কৃষক ফসল ফলান, কিন্তু দাম নির্ধারণ করে মধ্যস্বত্বভোগী বা ফড়িয়ারা। ধরুন, আপনি অনেক কষ্টে টমেটো চাষ করলেন। যখন ফসল উঠলো, তখন বাজারে টমেটোর দাম কম, কারণ সবাই একসাথেই বিক্রি করছে। আপনি যদি একা হন, আপনি সেই কম দামেই বিক্রি করতে বাধ্য, কারণ টমেটো পচনশীল, আপনি তা ধরে রাখতে পারবেন না।

এখানেই সমবায় জাদুর মতো কাজ করে। সমবায় যদি তার সকল সদস্যের টমেটো একসাথে সংগ্রহ করে, তবে তাদের কাছে শত শত মণ টমেটো জমা হয়। তখন তারা বাজারের ছোট দালালের কাছে না গিয়ে সরাসরি বড় কোম্পানির (যেমন: সস ফ্যাক্টরি) কাছে বা শহরের বড় বাজারে পণ্য পাঠাতে পারে।

বাস্তব উদাহরণ: যখন ১০ জন কৃষক আলাদাভাবে ১০টি ভ্যানে করে বাজারে পণ্য নিয়ে যান, তাদের দর কষাকষির কোনো ক্ষমতাই থাকে না। কিন্তু যখন সমবায় ৫টি ট্রাক বোঝাই করে পণ্য পাঠায়, তখন ক্রেতারা সমবায়ের নির্ধারিত দামে পণ্য কিনতে বাধ্য হয়।

এছাড়াও, সমবায় নিজস্ব গুদাম বা হিমাগার (Cold Storage) তৈরি করতে পারে। এতে কৃষকরা তাদের আলু, পেঁয়াজ বা অন্যান্য ফসল কম দামের সময় বিক্রি না করে সংরক্ষণ করতে পারেন এবং যখন বাজারে ভালো দাম উঠবে, তখন বিক্রি করতে পারেন। ফসলের লাভ তখন দালালের বদলে কৃষকের পকেটেই আসে।

৪. আধুনিক প্রযুক্তি ও জ্ঞানের প্রসার ঘটানো

কৃষিকাজ এখন আর শুধু লাঙ্গল-গরুর যুগে সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন একটি বিজ্ঞান। নতুন নতুন উচ্চ ফলনশীল জাত, পরিবেশবান্ধব কীটনাশক, মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করে সার প্রয়োগ, ড্রিপ ইরিগেশন (ফোঁটায় ফোঁটায় সেচ) , কত নতুন প্রযুক্তি আসছে! একজন সাধারণ কৃষকের পক্ষে এই সব তথ্য রাখা বা নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করা কঠিন। সমবায়ের একটি বড় উদ্দেশ্য হলো তার সদস্যদের জন্য একটি ‘জ্ঞান ভাণ্ডার’ হিসেবে কাজ করা।

সমবায় সমিতিগুলো খুব সহজে কৃষি বিশেষজ্ঞদের এনে বা সরকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সহায়তায় কর্মশালা বা প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারে। কখন কোন ফসল চাষ করলে লাভ বেশি, কোন রোগে কী করণীয়, বা সরকারি কোনো ভর্তুকি (Subsidy) আসছে কিনা, এই সব তথ্য সমবায় তার সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেয়। ফলে সবাই মিলে আধুনিক চাষাবাদে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে এবং উৎপাদন বহুগুণ বেড়ে যায়।

৫. ঝুঁকি কমানো এবং সামাজিক নিরাপত্তা তৈরি করা

কৃষিকাজ পুরোটাই প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার উপর নির্ভরশীল। বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় বা পোকার আক্রমণে যেকোনো সময় সব ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

যখন একজন কৃষক একা থাকেন, তখন এই ধরনের দুর্যোগ তাকে পথে বসিয়ে দেয়। কিন্তু তিনি যদি সমবায়ের অংশ হন, তবে তিনি একা নন। সমবায় তার সদস্যদের জন্য একটি ‘আপদকালীন তহবিল’ (Risk Fund) গঠন করতে পারে। কোনো সদস্য বড় কোনো বিপদে পড়লে (যেমন: ফসলের ক্ষতি বা অসুস্থতা), সমবায় তার পাশে দাঁড়ায়।

এটি শুধু আর্থিক সহায়তাই নয়, এটি একটি বিশাল মানসিক শক্তি। এই যে “বিপদে পড়লে আমার সংগঠন আমার পাশে আছে” এই বিশ্বাসটি কৃষকদের মধ্যে একতা, নেতৃত্ব এবং সামাজিক বন্ধন তৈরি করে, যা টাকা দিয়ে কেনা সম্ভব নয়।

কৃষি সমবায় কেন প্রয়োজন? (বাস্তব সুবিধা)

উপরের উদ্দেশ্যগুলো যখন সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তখন এর সুফল কী কী হতে পারে, তা এক নজরে দেখে নিন:

  • কৃষকের আয় বৃদ্ধি: খরচ কমে এবং পণ্যের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের লাভ বাড়ে।
  • মধ্যস্বত্বভোগীদের অবসান: কৃষক এবং চূড়ান্ত ক্রেতার মধ্যে সংযোগ তৈরি হওয়ায় দালালি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে।
  • খাদ্য নিরাপত্তা: সঠিক সংরক্ষণ (হিমাগার) এবং পরিবহনের ফলে ফসলের অপচয় কমে, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখে।
  • গ্রামীণ কর্মসংস্থান: সমবায়গুলো যখন বড় হয়, তখন তাদের ম্যানেজার, হিসাবরক্ষক, ড্রাইভার, গুদাম রক্ষক ইত্যাদি পদের জন্য লোকবল প্রয়োজন হয়, যা গ্রামেই নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করে।
  • সামাজিক একতা: এটি কৃষকদের মধ্যে বিভেদ কমিয়ে আনে এবং একটি ঐক্যবদ্ধ সম্প্রদায় তৈরি করে।

কৃষি সমবায় বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জসমূহ

বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জসমূহ
বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জসমূহ

সমবায়ের ধারণাটি যত সুন্দরই হোক, এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন। এর প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো হলো:

  • সৎ ও দক্ষ নেতৃত্বের অভাব: সমবায় যদি একজন অসাধু বা অযোগ্য নেতার হাতে পড়ে, তবে সদস্যরা খুব দ্রুত আস্থা হারিয়ে ফেলেন।
  • সদস্যদের আস্থার অভাব: অনেকেই মনে করেন, “আমার টাকাটা কি মেরে দেবে?” এই অবিশ্বাস দূর করাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
  • অভ্যন্তরীণ কোন্দল: অনেক সময় সদস্যদের মধ্যে ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কোন্দল সমবায়ের উদ্দেশ্যকে নষ্ট করে দেয়।
  • পর্যাপ্ত মূলধনের অভাব: একটি হিমাগার বা বড় গুদাম তৈরি করার জন্য যে প্রাথমিক মূলধন দরকার, তা সংগ্রহ করা ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য কঠিন হতে পারে।

আমার শেষ কথা

সবকিছু বিবেচনা করে, আমরা যদি আবার সেই মূল প্রশ্নে ফিরে যাই কৃষি সমবায়ের উদ্দেশ্য কি?

এর সহজ উত্তর হলো: কৃষি সমবায়ের উদ্দেশ্য শুধু সার-বীজ বিক্রি বা ঋণ দেওয়া নয়। এর আসল উদ্দেশ্য হলো কৃষকের মর্যাদা ফিরিয়ে আনা। এর উদ্দেশ্য হলো বিচ্ছিন্ন, দুর্বল কৃষককে একত্রিত করে তাকে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা, যাতে তার উৎপাদিত ফসলের দাম সে নিজেই নির্ধারণ করতে পারে। গ্রামীণ অর্থনীতির ভাগ্য ফেরাতে হলে, কৃষকের মুখে সত্যিকারের হাসি ফোটাতে হলে, সফল কৃষি সমবায়ের কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই।

আপনার জন্য প্রশ্ন: আপনার এলাকায় কি কোনো সফল কৃষি সমবায় সমিতি দেখেছেন? অথবা সমবায় নিয়ে আপনার কোনো নেতিবাচক বা ইতিবাচক অভিজ্ঞতা আছে কি? নিচে কমেন্ট করে আপনার মূল্যবান মতামত জানান।

প্রশ্ন ১: সমবায় সমিতি কিভাবে গঠন করা হয়?

উত্তর: সাধারণত, একটি নির্দিষ্ট এলাকার (যেমন: একটি গ্রাম বা ইউনিয়ন) ন্যূনতম ২০ জন প্রাপ্তবয়স্ক কৃষক একত্রিত হয়ে সমবায় সমিতি গঠন করতে পারেন। এর জন্য প্রথমে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে হয়, সমিতির জন্য একটি নাম ও উপ-আইন (Bylaws) তৈরি করতে হয় এবং সবশেষে সমবায় অধিদপ্তরে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হয়।

প্রশ্ন ২: কৃষি সমবায় এবং এনজিও (NGO)-এর মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর: এটি একটি চমৎকার প্রশ্ন। মূল পার্থক্য হলো মালিকানায়। কৃষি সমবায় এর মালিক হলেন এর সদস্যরা (অর্থাৎ কৃষকরা) নিজেরাই; লাভ-লোকসান সবকিছুর সিদ্ধান্ত তারাই নেন। অন্যদিকে, এনজিও সাধারণত একটি তৃতীয় পক্ষ দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এটি অনুদান বা বাইরের তহবিলের উপর নির্ভরশীল; এটি মূলত একটি সেবা প্রদানকারী সংস্থা, মালিকানা প্রতিষ্ঠান নয়।

প্রশ্ন ৩: কৃষি সমবায়ের সদস্য হলে কি কি সুবিধা পাওয়া যায়?

উত্তর: সদস্য হিসেবে আপনি প্রধানত ৫টি সুবিধা পাবেন:

১. কম খরচে সার, বীজ ও যন্ত্রপাতি কিনতে পারবেন।

২. খুব সহজ শর্তে ও কম সুদে কৃষি ঋণ পাবেন।

৩. আপনার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবেন।

৪. আধুনিক চাষাবাদ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও তথ্য পাবেন।

৫. যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপদে আর্থিক ও সামাজিক সহায়তা পাবেন।

ভুট্টা বীজ বপন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এখানে প্রবেশ করুন।

Leave a Comment